কুষ্টিয়া প্রতিনিধি, ওয়াহিদুজ্জামান অর্ক
উপমহাদেশের প্রভাবশালী আধ্যাত্মিক সাধক ও বাউল সম্রাট লালন ফকির লালনের ১৩০তম তিরোধান দিবস ছিলো আজ। এই সময় আসলেই পা ফেলার জায়গা থাকতো না কুষ্টিয়ার সেই লালন আখড়াবাড়িতে। এবার নেই কোনও আনুষ্ঠানিকতা নেই কোন কোলাহল ।
করোনার কারণে এবারের লালন উৎসব স্থগিত করেছে প্রশাসন। এতে হতাশ লালন ভক্ত, অনুসারী ও দর্শনার্থীরা। আখড়াবাড়ির আশেপাশে অবস্থান নিয়ে দূর থেকেই তারা সাইজির তিরোধান দিবসের আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন।
কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায় গুরু সিরাজ সাইয়ের সঙ্গে ঘুরে জ্ঞান অর্জণ করে ফকির লালন বাউল সম্রাটে পরিণত হন। ১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক আধ্যাত্মিক এই সাধকের মৃত্যুর পর প্রথমে ছেউড়িয়ার আখড়া কমিটি ও পরে লালন একাডেমির উদ্যোগে অষ্টপ্রহরব্যাপী লালন স্বরণোৎসব হয়ে আসছে। করোনা ঝুঁকির কারণে এবার লালন উৎসব স্থগিত করেছে লালন একাডেমি।
তাই আখড়াবাড়ির গেট বন্ধ করা হয়েছে। সেখানে গণজমায়েত এড়াতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এরপরেও প্রতিবারের মতো দিনক্ষণ ঠিক রেখে কিছু লালন ভক্ত চলে এসেছেন। আখড়াবাড়িতে ঢুকতে না পেরে লালন একাডেমির সামনের রাস্তা, মাঠে এবং আশেপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন তারা। অনেকেই হতাশ মনে ফিরে গেছেন।
লালন অনুসারী বিষ্ণু শাহা ফকির বলেন, অসুবিধে হলেও দূর থেকেই তারা লালনের মানবধর্মের ও সাইজির তিরোধান দিবসের অষ্টম প্রহরের আনুষ্ঠানিকতা পালন করছেন।
লালন অ্যাকাডেমির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন বলেন, যেহেতু দেশ-বিদেশ থেকে লাখ লাখ মানুষ এখানে উপস্থিত হন। তাই বৈশ্বিক মহামারি করোনা ঝুঁকিতে এবার জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সুপারিশ, লালন অ্যাকাডেমি ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তে লালন উৎসব স্থগিত করা হয়েছে। এজন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিনি সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন।